আছিয়ার পরিণয়
কিছুদিন পরের ঘটনা, একদা পাত্রিপক্ষের লোকজন এসে আছিয়ার বিবাহের তারিখ ধার্য্য করে গেল। আছিয়ার পিতা ভগ্ন-হৃদয় নিয়ে যথাসম্ভব কন্যা বিবাহের আয়োজন করলেন। আছিয়ার মাতা ভাবতে ভাবতে দুশ্চিন্তায় পীড়িত হয়ে শয্যা গ্রহন করেছেন। সুতরান এ কন্যার বিবাহে তাঁর কিছুই করার ছিল না। করার মত সামর্থও ছিল না।
একদিকে এ চরম অবাঞ্চিত বিবাহ ও অন্যদিকে পত্নীর ভয়ানক পীড়িতাবস্থা মোজাহামকে যে কতদূর বিমর্ষ করে তুলেছিল তা সহজেই অনুমান করা চলে। তবু যন্ত্রচালিত চাকার মতই তিনি দায় পড়ে সম্মুখে চলেছিলেন ও একে একে সকল কার্য সম্পন্ন করতেছিলেন।
পাত্র কাবুসের পিতা জ্ঞানী লোক ছিল। তাই মোজাহাম গৃহের অবস্থা বুঝতে তার বাকী রইল না। সুতরান সে উদ্যোগী হয়ে নিজেই বলল, প্রিয় ভাই মোজাহাম! এতদিন আমাদের মাঝে আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিল না; বরং আমরা দুটি সম্প্রদায়ের লোক পরস্পরের প্রতি শত্রুতাভাবে পোষণ করতাম।
আজ হতে আপনার আমার মধ্যে আত্নীয়তা সৃষ্টি হল। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন যেন এ প্রীতির সূচনা ঘটতে পারে। আর আমি জানি যে, আমার অযোগ্য পুত্রের কাছে আপনার অতি আদরের গুণান্বিতা কন্যা প্রদানে মনে বড় ব্যাথা পেয়েছেন। তা দূর করার চেষ্টা করুন! জানবেন, ভালোর সংস্পর্শে এসে মন্দও ভাল হয়; উত্তমের সংসর্গের ফলে বহুকাল বহু অধমেরা উত্তম রুপ লাভ করেছেন।
এটা একদিকে যেমন অধম জনের সার্থকতা, অন্যদিকে এটা উত্তমজনের দান এবং মহত্বের পরিচয়। অতএব এবার আপনার কাছে দাবী এই যে, এখন হতে আপনার হাতে আমার অযোগ্য পুত্রটিকে তুলে দিলাম। তাকে পুত্ররূপে গ্রহণ করে তার কল্যাণার্থে চেষ্টা করুন।
কাবুসের পিতার এ আন্তরিকতা পূর্ণ বিজ্ঞ জ্ঞানোচিত কথাগুলো শ্রবণ করে মোজাহামের মনের ভাব অনেকাংশে লাঘব হল। তিনি জবাবে শুধু এতটুকুই বললেন, আল্লাহ আমাদের সহায় থাকুন।