আগে নামায পরে ওযূ
ইসলাম কোন দার্শনিক চিন্তাধারায় ফসল নয়। এটা মহান আল্লাহর একটি নির্দেশ। দর্শনের উর্ধ্বে এর স্থান। দর্শন যদি এর সাথে মিলে যায় তবে সেটা আকস্মিক ব্যাপার।
সুতরাং এ নির্দেশনা গ্রন্থ কোরআন আগে শিখতে হবে। পরে দর্শন বা তর্কশাস্ত্র পাঠ করলে বেশি সহায়ক হবে। কিন্তু যারা আগে কোরআন না পড়ে তর্কশাস্ত্র পাঠ করে তারা কোরআন হাদীসকে তর্ক বিদ্যার নিয়মে বুঝতে চেষ্টা করে। সুতরাং বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
মাওলানা গাঙ্গুহী (রহঃ) এর কাছে এরুপ এক তর্ক বিদ্যা পড়া ছাত্র হাদীস পড়তে আসলো। যখন এ হাদীসের আলোচনা শুরু হলোঃ আল্লাহ পাক কোন নামায ওযু ছাড়া কবূল করেন না।
তখন ছাত্রটি বললো, এতে তো নামায কবূল না হওয়ার কথা বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু নামায যে ছহীহও হবে না তা তো প্রমাণ হচ্ছে না। সম্ভবতঃ বিনা অযূতে নামায ছহীহ হবে, পরে যখন অযু করে হবে তখন সে নামায কবুল হয়ে যাবে।
এ কথা শুনে ক্লাসের সকল ছাত্র হেসে দিল। বেচারা যুক্তি বিদ্যা ভাল করেই শিখেছিল। কিন্তু নির্দেশ যে যুক্তির উর্দ্ধে সে কথা বুঝতে পারেনি।
নামায আগে আর অযু পরে হওয়ার ব্যাপারে ঠিক শৌচকার্য আগে সেরে নিয়ে পরে পায়খানা অনুরুপ।
অর্থাৎ এক লোকের ঘটির তলায় সামান্য ছিদ্র ছিল। ঘটি ভরে পানি নিয়ে সে পায়খানায় গেল। কিন্তু পায়খান করা শেষ হলে যখন পানি খরচ করবে তখন দেখে ঘটিতে পানি নেই। লোকটি অবাক হলো। পানি তো সে ভরেই এনেছিল। পানি গেল কোথায়? একদিন, দুইদিন, প্রতি দিনই এ রকম হয়।
একদিনও সে শৌচকর্ম করতে পারে না।
অবশেষে একদিন তার মাথায় এক বুদ্ধি উদয় হলো। সে খুশি মনে ঘটিতে পানি ভরে পায়খানায় প্রবেশ করলো। পায়খানায় ঢুকেই ঘটি ভরা পানি দিয়ে ভাল করে শৌচকর্ম করে নিল। এরপর পায়খানা করতে বসে মনে মনে ভাবলো আজ খুব জব্দ করেছি। এক দিনও শৌচকর্ম করতে পারেনি। আজ বেশ মজা করেই কাজটি সেরে নিয়েছি। এখন যত ইচ্ছা পায়খানা কর।
পায়খানা সমাধা করে সে বের হয়ে আসলো। তখন থেকে প্রতিদিনই সে এইরুপ করবে। মনে মনে খুব খুশী। এ ধরনের দার্শনিক যুক্তি মানুষকে গোমরাহ করে দেয়।
(ইলম ও আমল, পৃষ্ঠা-২৭৪)