অপু ও ফলচুরি রহস্য

মহানগরের কোলাহলের মাঝে, ব্যস্ত জনপথের কিছুটা দূরে একফালি সবুজ ল্যান্ডস্কেপ । সদ্য গড়ে ওঠা আবাসন । ঝাঁ চকচকে সব বাড়িঘর আর মধ্যে মধ্যে একচিলতে সবুজ লন। সীমানায় রয়েছে আদি-অনন্তকালের বড় বড় সব মহীরুহ । আম, জাম, কাঁঠাল, বেল, মাদার আরো কত কি ! এরা যেন আবাসনের আব্রু । ভেতরে বিশাল বিশাল লম্বা আকাশ ছোঁয়া টাওয়ার।

টাওয়ারের ছাদে উঠলে মহানাগরিক আকাশরেখা । আলোয় আলোয় ছয়লাপ শহুরে সৌন্দর্য্য । ছাদে উঠলে শোনা যায় কতরকমের পাখপাখালির গান আর বৃষ্টির জমা জলে দেখা যায় রকমারি পক্ষীস্নান । আবাসনে একটা পুকুর ছিল । সেটাকে কৃত্রিম জলাশয়ের রূপ দিয়েছে ডেভলপার । সেখানে মশার উত্পাত রুখতে অনেক মাছ ছাড়া আছে । সেই মাছ খেতে আসে মাছরাঙা পাখি । অপুদের নতুন বাড়িটা এইখানে । ছাদে দাঁড়িয়ে অপু রোজ শুনতে পায় ছোট্ট টুনটুনির ট্রিং ট্রিং । মাছরাঙা মাছ খেয়ে হয়ত দুমিনিট ছাদে এসে বসে । কখনো সামনের একটা বড় শিরীষ গাছে কপারস্মিথ পাখি এসে ঠুক ঠুক করে স্যাকরার মত ঠুকতেই থাকে । সত্যি সত্যি মনে হয় কোনো মেটালের ওপর যেন শব্দ হচ্ছে । মাঝে মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় কাঠঠোকরা কিম্বা বসন্তকালে দু-একটা হলদে বসন্তবৌরি । ঠাম্মার সাথে অপুর এসব শেয়ার করতে বড্ড ভালো লাগে । শালিখগুলো বড্ড ঝগড়ুটে তাই অপুর মোটেও পছন্দ নয় । শহরের রাস্তায় কত কাক দেখেছে অপু কিন্তু ওদের আবাসন এত পরিচ্ছন্ন যে সেখানে কাক নেই বললেই চলে । কিন্তু উঁচু উঁচু টাওয়ারের মাথায় আছে চিলের বাসা । এই নতুন বাড়িতে এসে অবধি চিলকে খুব কাছ থেকে দেখছে ছোট্ট অপু। অপার বিস্ময়ে তাকিয়ে সে চিলের ডানা ঝাপটানো দেখে । তবে চিলের চিঁ চিঁ চীত্কার তার আর ঠাম্মার মোটেও ভাল্লাগেনা । কত্ত বড় পাখি, তাই বুঝি শিকারী এরা । তীক্ষ্ণ দৃষ্টি । দেহ অনুপাতে ছোট্ট মাথা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে শুধু শিকারের জন্য ওত পেতে থাকে । অপু বিশ্বকর্মাপুজোর দুপুরে আকাশে ঘুড়ি ওড়া দেখে । ঘুড়ির মধ্যে দিয়ে ছাদের চিলগুলো বিশাল ডানা মেলে উড়ে যায় । অপু বিস্ময়ে ভাবে দুজনেই কাইট । দুজনেই উড়তে পারে । কি মিল এদের ! কিন্তু চিল কেমন যেন গম্ভীর । অপুদের ছাদে এসে বসে রোজ । তবুও তার মনের তল পায়না অপু । পোষ মানাতে পারেনা চিলগুলোকে । হঠাত একটা একতে ঘুড়ি কেটে এসে ছাদের আলসেতে পড়ে যায় । অপু ছুট্টে গিয়ে ঘুড়িখানা হাতে ধরে নেড়েচেড়ে দেখে । রঙীন ঘুড়ি । সূতোয় কি ধার! ছুটির দিনে বাবাকে বলবে উড়িয়ে দিতে আকাশে । চিল কিন্তু ঘুড়ির মত ধরা দিয়েও দেয়না । কেবল বিজ্ঞের মত অপুর দিকে চেয়ে দ্যাখে । চিল ছাড়াও এখানে আছে অসংখ্য কাঠবিড়ালী । আর আছে খট্ট্বাশ বা ভাম নামে বনবেড়াল । বড় বড় গাছ থেকে লাফ দিয়ে দিয়ে যায় তারা । সবুজের অনেকটাই এখনো বেঁচে আছে এ শহরে তাই বুঝি এই বনবেড়ালগুলো এখনো দিব্যি বেঁচে বর্তে আছে । বিশাল লম্বা আর মোটাসোটা লেজ হয় ভামেদের । গায়ের রংটা শেয়ালের মত হলদেটে ।

আর মুখটা মোটেও বেড়ালের মত নয় । তবুও কেন যে একে বন বেড়াল বলে জানেনা অপু । নীচে সিকিউরিটির মুখে শুনেছে ভাম নাকি রাতেরবেলায় খপাখপ পায়রা ধরে খায় । গায়ে একটা কেমন মিষ্টি গন্ধ থাকে এদের । অনেকটা গোবিন্দভোগ চালের মত । তাই গ্রামে গঞ্জে এদের গন্ধ-গোকুল বলে । ঠাম্মা বলেছেন অপুকে । ঠাম্মার দেশের বাড়ি পুরুলিয়াতে একবার ছোট্ট মুরগীর ছানাকে মুখে করে নিয়ে যেতে দেখেছেন তিনি নিজের চোখে । খুব নাকি সাংঘাতিক হয় এরা । মানুষের মত ওমনিভোরাস । অর্থাত সর্বভুক, সবকিছু খায় এরা । অলস দুপুরে কখনো সখনো কাঠবেড়ালীর দেখা মেলে । অপু চুপটি করে বসে বসে দেখে কাঠবেড়ালীর কর্মকান্ড । দুচোখে যেন কত বুদ্ধি আর ব্যস্ততার ছাপ!নিজের ল্যাজ সর্বস্ব দেহটি নিয়ে সুড়ুত সুড়ুত করে ছাদের এপার থেকে ওপারে যায় , কখনো ল্যাজটা তিড়িং তিড়িং করে ওপরে তোলে আর মুখ দিয়ে ট্রুঁ, ট্রুং,ট্রুঁ, ট্রুং রকম আওয়াজ করে আবার চারদিক দেখে। আবার সামনের ছোট্ট হাতদুটো নিয়ে জোড় করে যেন কিছু মিনতি করে নিজের কাছেই । মুখের হাবভাব বিজ্ঞের মত । যেন বলে, কুটু কুটু কু.. কুটুকু…. কাঠবেড়ালী বড্ড নিরীহ । গাছের কচি পাতা কুট করে কেটে ফেলে। গাঁদাফুলের ছোট্ট কুঁড়ি খায়। মা খুব রেগে যায় এতে । কিন্তু রামচন্দ্রের সেতুবন্ধে না কি মুখে করে একটা একটা করে নুড়ি বয়ে এনে দিয়ে সাহায্য করায় রামচন্দ্র এদের পিঠে হাত বুলিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন । তাই ঠাম্মা বলেছে এদের বিরক্ত না করতে । এইভাবে দিন কাটে অপুর । একটু পড়া, একটু খেলাধুলো। আবার একটু ছবি আঁকা কিম্বা ছাদে বসে বসে পাখী দেখা, কাঠবেড়ালীর কর্মকান্ড লক্ষ্য করা । হঠাত শুরু হল এক কান্ড । ঠাম্মার পুজোর ঘর থেকে একটা করে ফল কমে যায় । ডাইনিং টেবিলের ওপরে আগের রাতে কিনে আনা কলার খোসা পড়ে থাকে সকালবেলায় । থরে থরে সাজানো কলার খোসা । নিপুণ হাতে কলাটা ছাড়িয়ে শাঁসটা খেয়ে নিয়ে খোসাগুলো ফেলে রেখে চলে গেছে । রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডারের পাশ থেকে বেরুলো আধখাওয়া পাকা পেঁপে । আবার আরেকদিন ঘরের একপাশে সিকি খাওয়া আপেলটা । কিন্তু কে করছে এসব ? ঠাম্মা বলছিলেন “এ নিশ্চয়ই ঐ পাজি কাঠবেড়ালির কাজ, ফল খেতে তো সে ওস্তাদ! ” সেই শুনে অপু বলে উঠেছিল ” কিন্তু তুমি ভাম-বেড়ালকেও তো ছেড়ে দিতে পারোনা ঠাম্মা, সেও তো ফলপাকড় খায় , তুমিই তো বলেছিলে” সেই শুনে অপুর মা বলেছিলেন “এই নতুন বাড়িতে এসে এক মহা আপদ হোল দেখছি! ফলের যা দাম! সেই ফল নষ্ট করে রেখে যাচ্ছে রোজ, বুঝতাম যদি পুরোটা খেত!” অপুর বাবা কিন্তু গর্বের সাথে বলে উঠেছিলেন “আমি কিন্তু এই সব ঘটনা দেখার পর, এই পুরোনো শহরটাকে আরো একবার ভালোবেসে ফেলেছি ! কত সবুজের মাঝে কত জীবজগতের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ! সেটাতো একবার বলছোনা তোমরা” এবার অপু ঠান্ডামাথায় সেই ফলচুরি রহস্যের কিনারা করতে বসল । নতুন বাড়িতে আসা অবধি তিন অযাচিত অতিথি অপুকে ভাবিয়ে তুলেছে সর্বক্ষণ । চিল,ভাম-বেড়াল আর কাঠবেড়ালি ।

সকলেই বলছে চিল আর ভামবেড়ালি মোটেও ফ্রেন্ডলি নয় । পারলে মানুষের ক্ষতি করে, অঘটন ঘটিয়ে অনর্থ বাধাতেও ওস্তাদ । সেই দিক থেকে কাঠবেড়ালিকে আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ মনে হয় । কিন্তু সেও সুযোগ পেলেই এটা-ওটা-সেটা খেয়ে নেয়। গাছের ক্ষতি করে । তবে কাঠবেড়ালিকে বড্ড কিউট লাগে অপুর । মনে তো হয় বেশ বন্ধু বন্ধু । আর ঐটুকুনি প্রাণী অত বড় পাকা পেঁপেকে টেনে নিয়ে মোটেও গ্যাস সিলিন্ডারের পাশে যাবেনা । কে জানে ? হতেও পারে । টেবিল থেকে মাটিতে ফেলে তারপর কিছুটা খেয়ে নিয়ে হালকা করে টেনে নিয়ে যাওয়াটাও বিচিত্র নয় । অতএব এখুনি সন্দেহের তালিকা থেকে তাকে বাদ দেওয়া যাবেনা । চিল ঘরে ঢোকেনা । আর ফলমূল খায়ও না । কাজেই এযাত্রায় অপু চিলকে বেকসুর খালাস দিল । মনে মনে বলে উঠল “চিল, তোর ডানায় সোনালী রোদ মেখে উঁচুতে উড়ে চল তুই উড়োজাহাজের মত দম নিয়ে । আর নীচে কোনো মরা জীবজন্তু দেখলে খেয়ে দেয়ে রাস্তাঘাট পরিষ্কার করে দিস, ছেড়ে দিলাম এযাত্রায় তোকে” সন্ধ্যেবেলায় বাড়িটা চুপচাপ হয়ে যায় । ঠাম্মা বসে ঠাকুরের ব‌ই নাড়াচাড়া করেন । মা হয়ত একটু হাঁটতে বেরোয় আর অপুর বাবা অফিস থেকে এলেই অপু তার সাথে ল্যাপটপে বসে এটা-ওটা-সেটা দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে । তারপর কখন আবার মনে পড়ে যায় স্কুলের অসমাপ্ত বাড়ির অঙ্কের কথা । একছুট্টে গিয়ে সেটা শেষ করে বাবার পাশে বসে পড়ে, গেম খেলে একটু, গান শোনে একটু, ছোটদের অনলাইন ম্যাগাজিন পড়ে একটু । সেদিন হঠাত অপু দেখে, কি যেন একটা ছুট্টে তার পায়ের কাছ থেকে সরে গেল । অপু চুপিচুপি উঠে গেল বাবার পাশ থেকে । মুখে আঙুল রেখে বাবাকে কথা বলতে বারণ করল । ব্যাস ! আবার দেখে কি একটা কালচে ধূসর রঙের যেন দৌড়ে পালাল। নাঃ ইঁদুর তো নয় । এ তো বিশাল । কে জানে আবার ভামবিড়ালটা এল নাতো? কিন্তু ভামবিড়ালতো সে দেখেছে । আরো বড়সড়ো হয় । বাবাকে সে বলল বাড়ির সবকটা দরজা বন্ধ করে দিতে । ততক্ষণে সেই ধূসর কালো জিনিসটা লাফ দিয়ে উঠে পড়েছে আলমারীর মাথায় । এবার তার সাথে কিছুক্ষণ ধ্বস্তাধ্বস্তি । ব্যাস! ধূসর জীবটি পারবে কেন অপু আর তার বাবার সাথে । অবশেষে ঝাঁটার কোপে চাপা পড়ল তার লম্বা লেজটি । অপুর বাবা জানালেন ওটি একটি ধেড়ে ইঁদুর । সেযাত্রায় সমাধান হল সেই ফলচুরি রহস্যের । এদিকে ছাদের কচিগাছের চারা আর ফুলের কুঁড়ি বাঁচাতে অপুর মা কল রেখেছেন এক । চটচটে আঠা মাখানো কল । কাঠবেড়ালিকে আটক করার ফন্দী । ব্যাস! প্রথম দুপুরেই বাজিমাত ।

 

লাইন দিয়ে আকাশে চিলের চিঁচিঁ ডাকে ঘুম চটে গেল বাড়ির সকলের । অপুর সন্দেহভাজনদের তালিকাও ক্রমে বেড়েছে । চিল, ভাম, কাঠবিড়ালির সাথে যুক্ত হয়েছে ধেড়ে ইঁদুর । ফলের সাথে ফুলের ওপরেও আক্রমণ চলছিলো অনবরত । অপু ছুট্টে এসে দ্যাখে সেই আঠালো কলে আটকেছে এক নিরীহ চড়ুই । আর তাকে বাঁচাতে পেছন পেছন ধাওয়া করেছে কাঠবিড়ালী । অপু ততক্ষণে একটা রঙীন কাগজে বড় বড় হরফে স্কেচপেন দিয়ে লিখে ছাদের আলসের ধারে সেঁটে দিয়েছেঃ দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাখীরা ধীরে । নয়ত বিপদের সম্ভাবনা । এবার কাঠবেড়ালীকে কিছু করতে দেখে চিল এসে গেছে ছাদের আলসেতে । ছাদের আকাশ কালো কাকে ছেয়ে গেছে । চড়ুইকে বাঁচাতে গিয়ে কাঠবেড়ালির লেজটা চটচটে আঠায় আটকে তার অবস্থা একেবারে লেজে-আঠাতে । চিটে গুড়ের মত আঠা । এবার চিলটা আর লোভ সামলাতে পারলোনা । ঝুপ করে এসে খপ করে পায়ে করে চড়ুইটাকে যেই ধরতে যাবে অমনি তার ডানা আটকে গেল সেই আঠায় । ততক্ষণে অপু ডিজিটাল ক্যামেরায় ক্লিক করতে শুরু করে দিয়েছে । চিলের পায়ে বেচারা চড়ুই আর তখন যে সে কাঠবেড়ালিরর মাংসল শরীরে জোরসে কামড় বসাবে ততো তার মনের জোর নেই । এবার কথা হল কি হবে ? কে এই তিন প্রাণীকে রক্ষা করবে? কাকের কলরবে কিচ্ছু শোনা যাচ্ছেনা । আঠালো কলের চক্রব্যূহ থেকে তিন প্রাণী বেরুতেও পারছেনা ।
কে যাবে চিলের সামনে? যদি ঠুকরে দেয়? চোখটাই খুবলে নেয়? সাতপাঁচ ভেবে অপুরা সকলে সরে এল দুর্ঘটনা স্থান থেকে । ব্যাটা ভামবেড়ালি ছাদের নর্দমার মুখে উঠে এসেছে ততক্ষণে । নীচে থেকে কিছু যেন আভাস ইঙ্গিত পেয়েছিল সে । এইবার তার খেলা দেখানোর পালা । অপুরা দেখছে ছাদের কাঁচের দরজার ভেতর দিয়ে । ভাম এসে সুড়ুত করে কাঠবেড়ালীর ল্যাজটা ধরে সজোরে টান মারল ।চিল সামনে থেকে অত্ত বড় একটা চারপেয়ে জন্তু দেখেনি কখনো । সেই ফাঁকে চিলের পায়ে আঠা লাগানো চড়ুই প্রাণপনে নিজেকে ছাড়িয়ে ফুড়ুত করে উড়ে গিয়ে বসল ছাদের কার্ণিশে । “রাখে কেষ্ট মারে কে?’ আর ভামবেড়ালি কাঠবেড়ালিকে ছাড়িয়েছে ততক্ষণে । যেন জামিন পেল বেচারা । ওরা যে সমগোত্রীয় প্রাণী। ইঁদুরের মত রডেন্ট গোষ্ঠী । দাঁত থাকে ওদের ।

তাই একে অপরকে বাঁচানোটা আশ্চর্যের কিছু নয় । চিল সেই দেখে ভাবল এভাবেও বেঁচে থাকা যায়। অযথা কেন নিরীহ প্রাণীগুলোকে আর খাওয়া? সেই থেকে ওরা সকলে অপুদের ছাদে মনের সুখে আসা-যাওয়া করে । বন্ধুতায় বেঁচে র‌ইল তিনটি জীবনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান । চিল আর ভামবেড়ালী সেই থেকে কাঠবেড়ালীর মত নিরামিষাশী হয়ে উঠল । একসাথে ঘুরে বেড়িয়ে ওরা গাছের ফলপাকড় খায় । তবে মাঝে মধ্যে অপুদের গাছ যে নষ্ট করেনা তা নয় । সেটা অবিশ্যি দুষ্টু কাঠবেড়ালীর প্ররোচনায় ।

নবী জীবনের গল্প

চিন্টু ওস্তাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *